বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর নবনির্বাচিত সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, ‘আগামীতে নৌকার জয়জয়কার থাকবে। নৌকা ছাড়া কোনো কথা থাকবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমরা বিএনপিকে না নিয়ে নৌকায় উঠবো না, তাদের নিয়েই উঠবো।’
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্টার সংবাদকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা।
‘দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে এসেছেন, সামনে আপনার কী কী চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে বলে মনে করছেন’ – এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি। আমার সামনে বড় কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না।’
দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে স্থান পাওয়া প্রসঙ্গে মোফাজ্জল হোসেন মায়া চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের বিশ্বস্ত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের সম্মান দিতে জানেন। এ কাজে তিনি কখনো পিছপা হন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করায় জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার মতো একজন রাজপথের কর্মীকে তিনি উচ্চাসন দিয়েছেন।’
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেন কর্মীদের নেতা। বিশ্বস্ত ও ত্যাগী কর্মীদের যে তিনি সম্মান দেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ আমি। সেজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আজকে আমার এই জায়গায় আসার পেছনে সকলেরই অনেক অবদান রয়েছে।’
গতকাল মঙ্গলবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভা প্রসঙ্গে এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। ইসি গঠনে কাজ করছেন রাষ্ট্রপতি। নির্বাচন কমিশন নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটি বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে নাম চেয়েছে। সেই আলোকে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী বৈঠক ছিল। বৈঠকে আমিসহ নবাগত সদস্যদের সবাই শুভেচ্ছা জানান।’
বৈঠকে কাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে জানতে চাইলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমাদের কোনো পরামর্শ আছে কি না জানতে চেয়েছিলেন সভাপতি। সবাই কম-বেশি যার যার মতো করে নাম জানিয়েছে। তবে গোপনীয়তা রক্ষা করে নামগুলো প্রস্তাব করেছেন সবাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাদের নাম এসেছে বা কাদের নাম প্রস্তাব করা হতে পারে, সেটা একমাত্র দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। দলের সভাপতি সবকিছু বিবেচনা করে ১০ ফেব্রুয়ারি মধ্যে নামগুলো জানানোর কথা রয়েছে।’
দলের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই নতুন সদস্য বলেন, ‘আমাদের দল সবসময়ই গতিশীল। আওয়ামী লীগ ঘড়ির মতোই চলমান, এটা কখনো বন্ধ হওয়ার নয়।’
‘সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম দেয়া হবে না’ – বিএনপি নেতাদের এমন সিদ্ধান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘যে কাউকেই এখানে দেয়া হোক না কেন, কেউ না কেউ বিরোধিতা করবেই। বিএনপি তো আগেই প্রস্তুত থাকে নেগেটিভ কিছু বলার জন্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাংবাদিকরা তাদের (বিএনপির) কোনো কর্মসূচি প্রচার না করলে তিন মাসের মধ্যে এই দলের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, তাদের নাম মুছে যাবে। শুধু গণমাধ্যমই তাদের বাঁচিয়ে রেখেছে।’ এ সময় তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘তিন মাস আওয়ামী লীগসহ কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্টারভিউ সাংবাদিকরা না নিলেই দেখা যাবে কোন দল টিকে থাকে।’
চাঁদপুরের এই কৃতী সন্তান এবং বিভিন্ন সময়ে সরকার ও দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আরো বলেন, ‘নির্বাচনে কে এলো আর কে এলো না, সেটা দেখার বিষয় নয়। আমার বিশ্বাস, সবাই নির্বাচনে আসবে। নির্বাচনই একমাত্র পথ ক্ষমতায় যাওয়ার ‘
বাংলা মায়ের অকুতোভয় সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মায়া চৌধুরী বলেন, ‘এই দেশের মানুষের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা। আমার মতো অনেক ত্যাগী কর্মী সব জায়গাতেই আছেন। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে একটানা জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় থাকায় সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ আরো শক্তিশালী হয়েছে।’ আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর দল আরো পরিশুদ্ধ ও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Leave a Reply