আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মায়া চৌধুরী বীরবিক্রম কে গণসংবর্ধনা
সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাব মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম কে গণ সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিকালে ছেংগারচর সরকারি মডেল হাই স্কুল মঠে তাঁকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে মায়া চৌধুরীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মায়া বীরবিক্রম বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে শুরু করে আজকে ২০২২ একটানা ৫০ বছরের উপরে রাজনীতি করছি, চুল পরিমাণ আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানি করি নাই । জাতির পিতা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা রক্ত দিয়ে পালন করেছি। রক্ত দিয়ে শহীদ মিনার পবিত্র করছি।
সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলো,আল্লাহর রহমতে আপনাদের দোয়ায় আমি এবং হানিফ ভাই মানব ঢাল করে তাঁকে রক্ষা করেছি। এছাড়া, যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটাই পালন করছি।
মতলবের সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করে মায়া চৌধুরী বলেন, আমি গর্ববোধ করি, আমি মতলবের সন্তান। আমি গর্ববোধ করি, আমি একটা দলের সন্তান। উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যে জায়গায় ৪০ হাত পানি ছিল সে জায়গাও উন্নয়ন করেছি। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজসহ আরও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আমার বাবা একটানা ৩৬ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার বড় ভাই একটানা ১৫ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার আরেক ভাই বাবুল চৌধুরী ৫/৫ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আমরা মানুষকে ভালোবাসি, মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই। এই যে, ১৯৮৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মতলবে নির্বাচন করেছি, কারো সম্পর্কে কোনো কি গিবত বলেছি বলেন তো্?
তিনি আরও বলেন, এই এলাকার নুরুল হুদা, মতলবের ত্যাগী নেতা বিএনপির ভালো লোক। মন্ত্রী হয়েছে, এমপি হয়েছে, তাঁর সম্পর্কে বাজে কথা কোনোদিন বলি নাই। শামছুল হক সাহেব জাতীয় পার্টির মাননীয় মন্ত্রী ছিলেন, তাঁর সম্পর্কে তো কোনোদিন বাজে কথা বলি নাই। কারণ, তাঁরা মতলবের কৃতি সন্তান। কে কোন দল করলো সেটা কোনো বড় কথা না। মন থেকে সম্মান করা আমার এবং আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় আদর্শ। একটা কথা বলি, কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড় দিয়েছে পায়।
তিনি বলেন, কে কি বললো বলুক, আমি মাফ করে দিয়েছি। চলেন, আমরা আল্লাহকে হাজির-নাজির করে সবাই বলি, আমরা আজকে সর্বদা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমরা সবাই মতলবকে আরেকবার সিঙ্গাপুর বানাই, এই স্বপ্ন নিয়ে আমি বারবার মতলবের নির্বাচন করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপা আমাকে বলেছেন, বারবার মতলব দেশে নির্বাচন করস কিল্লিগা, ঢাকায় রাজনীতি করোস, ঢাকাতে এত আসন যেকোনো জায়গা থেকে নির্বাচন কর। আমি বলি না, আমার এই চরের মানুষ এটা একটা দ্বীপ ছিলো, এক দিকে মেঘনা, অন্যদিকে পদ্মা, রাস্তাঘাট নাই, কলেজ নাই, চিকিৎসা ব্যবস্থা নাই, আমি বলেছি আপা, আমি মতলবের মানুষের কষ্ট দেখেছি, তাই আমি তাদের কষ্ট দূর করতে চাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বলি, ভাই আপনাদের সাথে আমি থাকবো। কারণ, এই এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এখানে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা আছে, আছে অনেক সংগঠন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঠিক নেতৃত্বের কারণে এ দলকে (আওয়ামী লীগকে) কেউ পরাজিত করতে পারে নাই। আর পরাজিত করতে পারবেও না। আমার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ, মতলব উত্তর-দক্ষিণ থেকে অনেক নেতা-কর্মী এসেছেন, এ জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
গণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জনাব নাছির উদ্দিন আহম্মেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. রুহুল আমিন। উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ. কুদ্দুস এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ চাঁদপুর-২ আসনের হাজার হাজার নেতাকর্মী। অনুষ্ঠান শেষে জননেতা জনাব মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসব আনন্দ বিরাজ করতে থাকে। পরে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয়।
Leave a Reply